তুমি চেয়েছিলে একটি একান্ত বিকেল
যেখানে থাকবে না কোনো ব্যস্ততা,
শুধু থাকবে আমার চোখে আটকে থাকা অনুবর্তী প্রশ্ন:
“তুমি কি সত্যিই আছো, নাকি আমিই একা?”
আমি তাই তৎক্ষণাৎ
একটি শহরের যাবতীয় আলো নিভিয়ে দিলাম
আকাশছোঁয়া বিলবোর্ডে ‘বিপ্লব’ নামালাম,
গণপরিবহনকে করলাম স্থবির,
আর এক পরিত্যক্ত সিনেমা হলের ভাঙা সিঁড়িতে রেখে এলাম
আমার একক চুপচাপ ছায়া।
তুমি বুঝবে না,
তবে সেদিন আমি ঠান্ডা যুদ্ধের মানচিত্র খুলে বসেছিলাম
পশ্চিম আর পূর্বের ভেতর থেকে খুঁজছিলাম তোমার মতো কারো অবস্থান,
যার হাসিতে ছিল বার্লিন প্রাচীর ভাঙার আকাঙ্ক্ষা,
আর চোখে ছিল অস্ত্রবিরতিচুক্তির মতো এক অনুচ্চারিত আশা।
আমার হৃদয় ছিল এক মৃত সোভিয়েত সেন্ট্রাল কমিটি-
নিজের সিদ্ধান্তে বিশ্বাস হারানো,
তবু এখনও চায় যে
তুমি হোক আমার ইতিহাসের পুনর্লিখন।
তুমি চাইলে
আমি হো চি মিন সিটির গলিতে নামিয়ে আনতে পারি প্রেম,
বা কিউবার অলিতে গলিতে পই পই করে গুনে দিতে পারি
গেঁথে থাকা বিপ্লবের ছায়া।
তোমার চোখের পলকে আমি খুঁজি একটা অবরুদ্ধ স্বাধীনতা
যা শুধু আমিই বুঝি,
তবু আমার জীবনের প্রতিটি ব্যর্থ বিপ্লবের কেন্দ্রে ছিলে তুমি।
তুমি জানো?
শহরটা আজও ব্যস্ত-
বাজার দরদাম, ব্রেকিং নিউজ, রেড সিগন্যাল আর এক কাপ কফির ক্লান্তি,
তবুও আমার আঙুলের ফাঁকে জ্বলছে আধখানা সিগারেট,
একটা শীতল যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি
তোমাকে ফিরে পাওয়ার নাম করে।
আর ঠিক সেই সময়েই
কোনো লিফলেট ছাপা হয়ে যায় না,
কোনো সভা বসে না,
তবুও আমি জানি
আজ রাতে তুমি এসে হয়তো জিজ্ঞেস করবে,
“বলো তো, প্রেমের রাজনীতি কি এখনও বাঁচিয়ে রেখেছো?”
আমি একটুও দ্বিধা না করে বলবো
“হ্যাঁ, আমি এখনও তোমার জন্য বিশ্বযুদ্ধ এড়াতে পারি।”
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন